জলমহালের পানি শুকিয়ে মাছ শিকার : হুমকির মুখে স্লুইচগেট
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে জলমহালের পানি শুকিয়ে মাছ শিকার করতে গিয়ে হাওরের ফসলরক্ষার একটি স্লুইচগেট হুমকির মুখে পড়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ফসলডুবি ঘটতে পারে এমন শঙ্কায় উদ্বিগ্ন হাওরপাড়ের কৃষকরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়- জেলার অন্যতম হাওর জগন্নাথপুরের সর্ববৃহৎ নলুয়া হাওরের ফসলরক্ষার জন্য ভুরাখালি গ্রামের নিকটবর্তী এলাকায় নির্মিত হয় স্লুইচগেট। এই স্লুইচগেট দিয়ে বয়ে গেছে সরকারি হামহামি জলমহাল। ইজারাদাররা মাছ ধরার জন্য পানির মেশিন লাগিয়ে বিল শুকিয়ে ফেলছেন। এতে করে স্লুইচগেটটি হুমকির মুখে পড়েছে। এর মধ্যেই স্লুইচগেটের ব্লক নিচের দিকে পড়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান- স্লুইচগেটের ক্ষতি হবে বলে কখনও পানি শুকিয়ে এভাবে মাছ ধরা হয়নি। কিন্তু এবার ইজারাদাররা কৃষকদের বাধা উপেক্ষা করে বিল শুকিয়ে অসময়ে মাছ ধরছেন। ফলে স্লুইচগেটটি মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
ভূরাখালি গ্রামের কৃষক আকিক মিয়া জানান- হামহামি জলমহালের ইজারাদাররা মাছ ধরার জন্য পানি শুকিয়ে ফেলছেন। এজন্য স্লুইচগেটটি ঝুঁকিতে পড়েছে। ইতোমধ্যে স্লুইচগেটের ব্লক ভেঙে পড়ছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে হাওরে ফসলডুবির শঙ্কা রয়েছে।
দাসনোওয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা কৃষক নগেন্দ্র দাস জানান, নলুয়ার হাওরে জগন্নাথপুর ও দিরাই উপজেলার একাংশের কৃষকরা বোরো আবাদ করে আসছেন। ফসলরক্ষার জন্য নির্মিত স্লুইচগেট এলাকায় হামহামি জলমহালের মাছ শিকার করায় স্লুইচগেটটি এখন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
স্থানীয় চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রনধীর দাস নান্টু বলেন- ‘একজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে জলমহালের ইজাদারদের বার বার বলেছি পানি শুকিয়ে মাছ না ধরার কথা। কিন্তু তারা কথা শুনছেন না। ফলে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে ফসল রক্ষার স্লুইচগেটটি। বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবহিত করেছি।’
এ বিষয়ে জানতে হামহামি জলমহালের ইজারাদার উপেন্দ্র দাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জগন্নাথপুর উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন- ‘বিলে মাছ ধরার সময় শেষ। ইজাদারদের আমরা নিষেধ করে দিয়েছি পানি না শুকানোর জন্য। এখনই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হচ্ছে।’
জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান- এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।