উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগ : এমবাপের হ্যাটট্রিকে বিধ্বস্ত বার্সেলোনা
স্পোর্টস ডেস্ক :
ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতা উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগে (ইউসিএল) আরও একবার নাকানিচুবানি খেল স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা। ফ্রান্সের ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) কাছে প্রথম লেগে ১-৪ গোলে হেরে ইউসিএলের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বাদ পড়ার শঙ্কায় রোনাল্ড কোম্যানের শিষ্যরা।
স্পেনের ঘরোয়া ফুটবল লা লিগা কিংবা কোপা দেল রে’তে যেমন-তেমন, ইউসিএলে গত ২০১৫ সালের আসরের পর থেকেই হতাশাময় ফল পাচ্ছে বার্সেলোনা। এবারও যেন মিলল তারই পূর্বাভাস। ঘরের মাঠে শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচে বার্সেলোনা হেরে গেছে ১-৪ গোলের বড় ব্যবধানে।
অথচ ন্যু ক্যাম্পে ম্যাচের প্রথম গোলটি করেছিলেন বার্সা অধিনায়ক লিওনেল মেসি। সেই গোলের পর বার্সা শিবিরে আতঙ্ক বইয়ে দেন কাইলিয়ান এমবাপে। তার হ্যাটট্রিকের সঙ্গে ময়সেস কিনের গোলে প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে ৪-১ গোলের বড় জয় নিয়ে বাড়ি ফিরেছে পিএসজি।
গত মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে বার্সেলোনার ভরাডুবির ব্যবধান হতে পারত আরও বড়। ম্যাচের শুরুর দিকেই দুইটি দারুণ সুযোগ পেয়েছিল পিএসজি। প্রথমটি কাজে লাগাতে পারেননি পরে জয়ের নায়ক হওয়া এমবাপে আর পরেরটিতে দুর্বল শট নেন আর্জেন্টাইন তারকা ফরোয়ার্ড মাউরো ইকার্দি।
ম্যাচের ২৭ মিনিটের সময় প্রথম গোলটি করেন মেসি। ডি-বক্সের মধ্যে ফ্রেংকি ডি ইয়ংকে পেছন থেকে ফাউল করা হলে পেনাল্টি পায় বার্সেলোনা। স্পট কিক থেকে দলকে লিড এনে দেন অধিনায়ক। ইউসিএলের চলতি আসরে এটি তার চতুর্থ গোল, সব টুর্নামেন্ট মিলে ২০তম গোল করলেন তিনি।
এই এক গোলের লিড মাত্র পাঁচ মিনিট ধরে রাখতে পেরেছিল বার্সেলোনা। গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ার পর একের পর এক গতিময় আক্রমণে বার্সার নাভিশ্বাস তোলে পিএসজি। ম্যাচের ৩২ মিনিটের মাথায় ডি-বক্সে মার্কো ভেরাত্তির দারুণ পাস ধরে ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে ম্যাচে সমতা ফেরান এমবাপে।
প্রথমার্ধে আর গোল পায়নি কোনো দলই। পিএসজির হয়ে একটি সুযোগ নষ্ট করেন লারভিন কুরজোয়া, বার্সাকে এগিয়ে দিতে ব্যর্থ হন অ্যান্তনিও গ্রিজম্যান। যে কারণে ১-১ গোলে সমতায় থেকেই বিরতিতে যায় দুই দল। পরে দ্বিতীয়ার্ধে বাকি তিন গোলের মাধ্যমে জয় নিশ্চিত করে পিএসজি।
বিরতির পর ফিরে ২৫ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। প্রথমে ৬৫ মিনিটের সময় দলকে এগিয়ে দেন এমবাপে। তার মিনিট পাঁচেক পর ব্যবধান বাড়ান ময়সেস কিন। এ গোলেই জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় পিএসজির। তবে অপেক্ষা ছিল এমবাপের হ্যাটট্রিকের।
কাঙ্ক্ষিত হ্যাটট্রিক পূরণ করতেও খুব একটা সময় নেননি এই ফরাসি তারকা। ম্যাচের ৮৫ মিনিটের মাথায় কাউন্টার অ্যাটাকে নিজের তৃতীয় গোলটি করেন এমবাপে। হুলিয়ান ড্রাক্সলারের পাস পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান তিনি। এ নিয়ে ইউসিএল নকআউটে এমবাপের গোলসংখ্যা দাঁড়াল ৪।
এমবাপের হ্যাটট্রিকে পাওয়া এ জয়ে টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে এক পা দিয়েই রাখল পিএসজি। অন্যদিকে বার্সেলোনার সামনে এখন কঠিনতম চ্যালেঞ্জ। আগামী ১০ মার্চ দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে পিএসজির মাঠে গিয়ে অন্তত ৪ গোলের ব্যবধানে জিততে রোনাল্ড কোম্যানের দলকে।