সিলেটে অভিজিৎ স্মরণ : অভিজিৎকে হত্যা করেছে উগ্রবাদীরা, মুশতাকের খুনি কে?
স্টাফ রিপোর্টার :
বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় স্মরণে সিলেটে আলোক প্রজ্বলন করেছে গণজাগরণ মঞ্চ, সিলেট। শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ আলোক প্রজ্বলন অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অমর একুশে বইমেলা চলাকালে উগ্রবাদীরা কুপিয়ে হত্যা করে লেখক অভিজিৎ রায়কে। হত্যাকাণ্ডের ৬ বছর পূর্তিতে এই লেখকের স্মরণে আলোক প্রজ্বলনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন- বিজ্ঞানভিত্তিক লেখালেখির কারণে অভিজিৎ রায়কে খুন করা হয়েছে। উগ্রবাদীরা চাপাতির কুপে তার লেখালেখি , তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে চেয়েছে। অভিজিৎসহ আরও অনেক লেখককে এভাবে হত্যা করা হয়েছে।
বক্তারা বলেন- আজকের দিনে দেশে উগ্রবাদী গোষ্ঠির কার্যক্রম কিছুটা ম্রিয়মাণ হয়ে আসলেও মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং উগ্রবাদের চর্চা আরও ছড়িয়ে পড়েছে। এখন সরকারই মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছে। মত প্রকাশের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে মানুষজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এই আইনে গ্রেপ্তার হওয়া লেখক মুশতাক আহমদ বৃহস্পতিবার কারাগারে মারা গেছেন।
এই মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে বক্তারা প্রশ্ন রেখে বলেন- অভিজিতকে হত্যা করেছে উগ্রবাদীরা কিন্তু মুশতাকের খুনি কে?
স্মরণ অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন- অভিজিৎ রায়কে হত্যা করে বিজ্ঞান ও মুক্তবুদ্ধির চর্চায় আঘাত আনতে চেয়েছিল উগ্রবাদীরা। কিন্তু হত্যা করে কখনোই মুক্তবুদ্ধির চর্চা দমানো যাবে না। বরং নিহত অভিজিৎ রায় দেশের বিজ্ঞানমনস্ক তরুণ প্রজন্মের কাছে হয়ে উঠেছেন প্রেরণার নাম।
গণজাগরণ মঞ্চ, সিলেটের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবুর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের সংগঠক রাজীব রাসেল, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলার সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান, লেখক শামসুল আমিন, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেটের সাবেক সভাপতি সপ্তর্ষি দাস, ছাত্রফ্রন্ট নগর শাখার সভাপতি সঞ্জয় কান্ত দাস ও ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক নাবিল এইচ প্রমুখ।
এতে সমাপনী বক্তব্য দেন- সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় উগ্রপন্থীদের হাতে খুন হন মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়। ওই হামলায় গুরুতর আহত হন তাঁর স্ত্রী বন্যা আহমেদ।
আর বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে মারা যান লেখক মুশতাক আহমেদ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে র্যাবের করা মামলায় তিনি কারাগারে বন্দি ছিলেন।