কুলাউড়ায় গারো পুঞ্জির পানগাছ কেটে ফেলার অভিযোগ
জুড়ী (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা
গারো পুঞ্জির বাগানের বেশ কিছু পানগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। মঙ্গলবার কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে সাহেবটিলা এলাকায়প্রথম আলো
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে সাহেবটিলা গারো পুঞ্জির (ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী গারো লোকজনের বসতি) বাগানের বেশ কিছু পানগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় গারো পরিবারগুলোর অভিযোগ, সামাজিক বনায়ন করতে বন বিভাগের লোকজন এসব গাছ কেটে ফেলেছেন।
পুঞ্জির লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাহেবটিলা পুঞ্জিতে দীর্ঘদিন ধরে ১৮টি গারো পরিবার থাকে। পান বিক্রি করে তাঁদের সংসার চলে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বন বিভাগের নলডরি বিটের ফরেস্টার জহিরুল ইসলাম লোকজন নিয়ে পানবাগানে ঢোকেন। এ সময় তাঁরা ১৫০টি পানগাছ এবং ২০-২৫টি বনজ গাছ কেটে ফেলেন। বেলা তিনটা পর্যন্ত তাঁরা সেখানে অবস্থান করেন। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা পুঞ্জিতে গিয়ে সামাজিক বনায়নে উপকারভোগী হওয়াসহ এ কাজে তাঁদের সহযোগিতার প্রস্তাব দেন। এর আগে ১০ এপ্রিল বন বিভাগের কর্মকর্তারা আশপাশের কিছু লোক নিয়ে পুঞ্জিতে গিয়ে পানবাগানের ভেতরে সামাজিক বনায়ন করার কথা জানিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে ১২ এপ্রিল পুঞ্জির লোকজনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।
পুঞ্জির মন্ত্রী (পুঞ্জিপ্রধান) গ্রিনাল রংদি বুধবার মুঠোফোনে গণমাধ্যমকে বলেন- হুমকি-ধমকি দেওয়ার এক দিন পরই বাগানের পানগাছ কেটে ফেলা হলো। এ পরিস্থিতিতে তাঁরা জীবিকা হারানোর আশঙ্কা করছেন। পানগাছ কাটার বিষয়টি তাঁরা ইউএনও এবং ওসিকে জানিয়েছেন। লকডাউনের কারণে তাঁরা পুঞ্জি থেকে বের হতে পারছেন না। থানায় গিয়ে এ বিষয়ে মামলা করবেন।
তবে ফরেস্টার জহিরুল ইসলাম দাবি করেন, সাহেবটিলা পুঞ্জিতে কোনো গাছ কাটা হয়নি। ওই পুঞ্জির জমি বন বিভাগের। গারো লোকজন জমিটি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। সেখানে প্রায় ১০০ একর জমিতে তাঁরা সামাজিক বনায়ন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রাথমিকভাবে সেখানে চারাগাছ উৎপাদন করা হবে। পুঞ্জির লোকজনকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করার কথা জানাতে সেখানে গিয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষণ রায় বলেন- পুঞ্জির লোকজন হঠাৎ করে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। খবর পেয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে তিনি মুঠোফোনে কথা বলেছেন। পুঞ্জিতে পান বা অন্যান্য গাছ কাটার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।