ঢাকায় ধরপাকড় : সিলেটের পরিস্থিতি নিয়ে যা বলছেন হেফাজত নেতারা
সময় সংগ্রহ
মো. রেজাউল হক ডালিম : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতির পর হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সারা দেশে তিন শতাধিক হেফাজত নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
এর মধ্যে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সভাপতি আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব, হেফাজতের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মুফতি শাখাওয়াত হোসাইন রাজী, কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, ঢাকা মহানগরীর সহ-সভাপতি মাওলানা জুবায়ের আহমেদ, সহ-প্রচার সম্পাদক মুফতি শরিফ উল্লাহ, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব ও বাংলাদেশে খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিনসহ কেন্দ্রীয় শীর্ষ পর্যায়ের অন্তত ১০ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন জেলায় আরো নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সর্বশেষ রোববার (১৮ এপ্রিল) হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিকে, ঢাকায় কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ব্যাপক ধরপাকড় হলেও সিলেটে এখনও হেফাজতের কোনো নেতা-কর্মী গ্রেফতার হননি। সহসা এমন কোনো আভাসও নেই বলে জানিয়েছে সিলেট হেফাজত ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিলেট মহানগর হেফাজতের এক শীর্ষ নেতা এই প্রতিবেদককে বলেন- ‘কিছু নির্ভরযোগ্য সূত্রে আমারা জানতে পেরেছি- সিলেটে ধরপাকড়ের আশঙ্কা নেই। সিলেটে আমরা যতো আন্দোলনই করেছি সবই শান্তিপূর্ণ এবং কেন্দ্রের ডাকে। আর আমাদের সিলেটের কোনো নেতাই কোনো সভা-সমাবেশে উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য কখনোই দেননি। আমরা আশা করছি, শান্ত জনপদ সিলেট শান্তই থাকবে।’
ওই নেতা আরও বলেন- ‘হেফাজতের মূলনীতি হচ্ছে- আমরা কাউকে সরকারের গদি থেকে নামাতেও চেষ্টা করবো না, আবার কাউকে সরকার বানাতেও চেষ্টা করবো না। আমাদের মিশন হচ্ছে- ইসলাম ও দেশবিরোধী কোনো কার্যকলাপ সংঘটিত হলে বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিগোচরে এনে শান্তিপূর্ণভাবে এর প্রতিবাদ করা এবং প্রতিহত করার দাবি জানানো।’
কেন্দ্রীয় কতিপয় নেতার প্রতি তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- ‘হেফাজত হচ্ছে ইসলামি বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিক একটি অরাজনৈতিক বৃহৎ সংগঠন। তবে কেউ কেউ বড় প্লাটফর্ম পেয়ে অনাকাঙ্খিতভাবে নিজের দল বা ব্যক্তিত্বকে জাহির করতে চান। আর এক্ষেত্রে গরম বক্তব্য দিতে গিয়ে নিজেও বেকায়দায় পড়েন, হেফাজতকেও বেকায়দায় ফেলেন।’
এদিকে, সিলেটের হেফাজত নেতাদের বক্তব্যের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বক্তব্যেরও মিল পাওয়া যাচ্ছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে- ‘এরকম কিছু সহসাই ঘটছে না। সিলেটে পুলিশ এখন সরকার নির্দেশিত কঠোর লকডাউন বস্তবায়ন এবং জনসাধারণের স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করতে মাঠে অবিরাম কাজ করছে। পুলিশের মনোনিবেশ আপাতত সেদিকেই।’