ইউএনওর অনুমতি নিয়ে কঠোর লকডাউনে বিশাল হাট!
সময় সংগ্রহ :
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করেছেন। এই লকডাউন অপেক্ষা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজেই উপজেলা সদরে বাজার বসানোর অনুমতি দিয়েছে।
প্রশাসনের নাকের ডগায় উপজেলা সদরে মাওলাগঞ্জ বাজার রোববার (১৮ এপ্রিল) সাপ্তাহিক হাট বসেছে। বাজারে আগতদের নেই শারীরিক দূরত্ব মানার বালাই, বেশির ভাগ মানুষের মুখে নেই মাস্ক। হাজার হাজার মানুষের আগমনে করোনা সংক্রমণের বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে এলাকার সচেতন মহলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
শুধু তাই নয়, সারা বাঞ্ছারামপুর উপজেলাজুড়েই লকডাউনের কোনো নিয়মনীতি নেই। ইউএনও মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন সরোয়ারের ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী। তবে পুরোদমে বাজারে হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটলে বিষয়টি ইউএনওকে অবগত করায় দুপুর দেড়টার দিকে ইউএনও বাজারে গিয়ে নামেমাত্র বাজার বন্ধের নির্দেশ দিয়ে এসেছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরে মাওলাগঞ্জ বাজার সপ্তাহে প্রতি রোববার হাট বসে। এখানে বাঞ্ছারামপুর ও আশপাশের উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত ক্রেতা-বিক্রেতা আসে হাটবারে। মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় কাঠ, বাঁশের জন্য এ বাজার বিখ্যাত। এ বছর এই বাজারে ইজারা পান জগন্নাথপুর গ্রামের মজিবুর রহমান খোকা।
মাওলাগঞ্জ বাজারে দুপুর সাড়ে ১২টায় গিয়ে দেখা গেছে, শত শত মানুষের বিশাল সমাগম। একে অপরকে যেন গাঁ-ঘেষেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাজারের মাঠের প্রবেশ মুখেই কুলা, আনতা, পলো, চালুন, টুকরি, ঝাড়ুসহ বিভিন্ন বেতের ও বাঁশের মালামালে বিশাল পসরা বসেছে। এর পাশেই বিভিন্ন বীজের হাট। রয়েছে লুঙ্গি ও তৈরি পোশাক কামারের দোকান, কাঁঠের বাজার। বিশাল জায়গাজুড়ে বাঁশ ও মুলির কয়েকটি দোকান বসেছে।
এ বিষয়ে বাজারের সাপ্তাহিক বিক্রেতা আলম মিয়া বলেন- আমরা ইজারাদারের কাছে খবর নিয়েছি, তারপর বাজারে এসেছি। শুনলাম ইউএনও স্যারের কাছ থেকে নাকি অনুমতি নিছে।
এ ব্যাপারে মাওলাগঞ্জ বাজারের ইজারাদার মজিবুর রহমান বলেন- লকডাউনের কারণে ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা বলেই আজকের বাজার বসিয়েছি। স্যার আমাদের কাঁচা বাজার বসাতে বলেছেন। কাঠ বাজার সপ্তাহে সাত দিনই চলে। আর বাজারে বাঁশের দোকান, কামার, লুঙ্গি, তৈরি পোশাক, আনতা, কুলা ব্যবসায়িরা সবাই নিজে থেকেই এসেছি।
এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন সরোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- বাজার বসানো নিয়ে আমার কাছে লোকজন এসেছিল। তারা তরকারির দোকান বসানোর কথা বলেছিল। কিন্তু এমনভাবে জমায়েত করার কথা ছিল না। খবর পেয়ে দুপুরে গিয়ে বাজার বন্ধ করে দিয়েছি।