শঙ্খ ঘোষের স্ত্রীও চলে গেলেন
সময় সিলেট ডট কম
করোনা আক্রান্ত হয়ে কবি শঙ্খ ঘোষ মারা যাওয়ার ৮ দিনের মাথায় মৃত্যু হলো তার স্ত্রী প্রতিমা ঘোষেরও। তিনিও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯।
গত ১৪ এপ্রিল করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে শঙ্খ ঘোষের। একইসঙ্গে আক্রান্ত হন তার স্ত্রীও। বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল তাদের। গত ২১ এপ্রিল মৃত্যু হয় শঙ্খ ঘোষের।
ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য মতে, শঙ্খ ঘোষ চলে যাওয়ার পর গত কয়েকদিনে প্রতিমা দেবীর শারীরিক অবস্থার অত্যন্ত অবনতি হয়েছিল। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিলো যে তাকে বাড়ি থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতিও ছিল না। ফলে শঙ্খ ঘোষষের মতো তারও বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল।
প্রতিমা দেবীর ছোটবেলা কেটেছে জলপাইগুড়ির উকিলপাড়ায়। আনন্দচন্দ্র কলেজে পড়াশোনা করেন। এরপর পড়তে আসেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিদ্যাসাগর কলেজ ফর উইমেনের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। শঙ্খ ঘোষের সঙ্গে বিয়ে ১৯৫৬ সালে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ কর্মজীবনে নানা ভূমিকায় দেখা গেছে শঙ্খ ঘোষকে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনাও করেছেন। ইউনিভার্সিটি অব আইওয়ায় ‘রাইটার্স ওয়ার্কশপ’-এও শামিল হন। বছর দুয়েক আগে ‘মাটি’ নামের একটি কবিতায় কেন্দ্রীয় সরকারের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধেও গর্জে উঠেছিলেন তিনি।
বাংলা কবিতার জগতে শঙ্খ ঘোষের অবদান কিংবদন্তিপ্রতিম। ‘দিনগুলি রাতগুলি’, ‘বাবরের প্রার্থনা’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’ উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ হিসেবেও তার খ্যাতি সর্বজনবিদিত।
দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে একাধিক সম্মাননা পেয়েছেন শঙ্খ ঘোষ। ১৯৭৭ সালে ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যগ্রন্থটির জন্য তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে কন্নড় ভাষা থেকে বাংলায় ‘রক্তকল্যাণ’ নাটকটি অনুবাদ করেও সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান তিনি। এ ছাড়া রবীন্দ্র পুরস্কার, সরস্বতী সম্মান, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১১ সালে তাকে পদ্মভূষণে সম্মানিত করে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার।