সিলেটে হেরোইন ও অস্ত্রসহ যুবলীগ নেতা জাকির গ্রেফতার : বোমা ফাটালেন বাবু
সময় সংগ্রহ :
সিলেটে যুবলীগ নেতা জাকিরুল আলম জাকির (৪১) কে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এসময় তার কাছ থেকে বিদেশী রিভলবার, ২টি গুলি ও হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত জাকির মোগলাবাজার থানাধীন কুচাই এলাকার সাজ্জাদ আলীর ছেলে।
সোমবার (৩ মে) দুপুরে বিমানবন্দর থানা পুলিশ যুবলীগ নেতা জাকিরুল আলম জাকিরকে অস্ত্র ও মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। এর আগে রোববার রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল বিমানবন্দর থানাধীন মালনীছড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-৯ এর এএসপি ওবাইন। তিনি বলেন- গ্রেফতারকৃত জাকির শীর্ষ সন্ত্রাসী। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব অভিযান চালিয়ে তার কাছ থেকে বিদেশী রিভলবার, ২টি গুলি ও ১০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করে।
এদিকে, ঘটনার প্রায় ২৪ ঘন্টা পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বোমা ফাটালেন ঘটনার সময় জাকিরের সাথে আটক হওয়া আরও এক প্রতক্ষদর্শী যুবলীগ নেতা নূর মোহাম্মদ বাবু। তিনি সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। পাঠকদের জন্য বাবুর স্ট্যাটাসটি হুবহু দেয়া হল:
“আমি ওর সাথে ছিলাম আমাকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল পরে আমাকে রাত একটা বাজে ছেড়ে দিয়েছে রেব আমরা একসাথে ১০, থেকে ১৫ জন লোক বিমানবন্দর থানাতে বিচারে গিয়েছিলাম। জাকিরুল আলম জাকির নির্দোষ তার সাথে কিছু পায় নাই রেব এগুলো মিথ্যা সাজানো বানোয়াট, তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।”
যুবলীগ নেতা নূর মোহাম্মদ বাবু সংবাদমাধ্যমকে বলেন- ‘তখন রাত প্রায় সাড়ে ১১টা। একটি সালিশি বৈঠকে আমরা ক’জন মুরব্বিসহ এসএমপি’র এয়ারপোর্ট মডেল থানায় যাই। সেখান থেকে ফেরার পথে থানা থেকে প্রায় ৩০ গজ দূরে একটি হাইয়েস গাড়ি নিয়ে ক’জন র্যাব সদস্য আমাদের সবার মোটরসাইকেল গতিপথ রোধ করে দাঁড় করায়। আমি ও জাকির একটি মোটরসাইকেলে ছিলাম। তখন র্যাব সদস্য আমাদের দেহ তল্লাশী করে। আমাদের কাছে কোনো অবৈধ জিনিস পায়নি র্যাব। সেই সময় ঘটনাস্থলে স্থানীয় এলাকাবাসিসহ উপস্থিত প্রতক্ষদর্শী অনেকেই ছিলেন। তারাও বিষয়টি দেখেছেন।
বাবু বলেন- ‘তখন র্যাবের দুই সদস্য আমাদের জোর করে অস্ত্র ধরে তাদের গাড়িকে তুলে নেয়। পরে আমাকে ও জাকিরকে মালনীছড়া চা-বাগানের ভিতরে নেয়া হয়। সেখানে জাকিরকে নেতা সাজো এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বেধরক পিটুনি দেয় র্যাব সদস্যরা। এরপর জাকিরকে তাদের গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়। পরে রাত প্রায় ১টার দিকে র্যাবের একটি গাড়ি দিয়ে আমাকে আম্বরখানায় তারা নামিয়ে দেয়। বিষয়টি আমি সবাইকে অবগত করি। পরে শুনি জাকিরকে নাকি অস্ত্র ও মাদকসহ মালনীছড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে!
ঘটনার আরেক প্রতক্ষদর্শী তুফায়েল আহমদ। যার জায়গা নিয়ে বিরোধের সালিশি বৈঠক ছিলো এসএমপি’র এয়ারপোর্ট মডেল থানায়। তিনি বলেন- আমার জায়গার একটি সালিশি বৈঠকে আমার এলাকার ক’জন মুরব্বিসহ আমরা এসএমপি’র এয়ারপোর্ট মডেল থানার এসআই রিপনের কাছে যাই। সেখানে বৈঠকের সময় পরিবর্তণ হওয়ায় আমরা নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য রওনা হওয়ার সাথে সাথে থানার প্রায় ৩০ গজ দূরে একটি হাইয়েস গাড়ি থেকে ক’জন র্যাব সদস্য আমাদের সবার মোটরসাইকেল গতিপথ রোধ করে দাঁড় করায়। তারা তখন বাবু ও জাকিরের দেহ তল্লাশী করে। এসময় তাদের কাছে কোনো অবৈধ জিনিস পায়নি র্যাব সদস্যরা। পরে র্যাবের দুই সদস্য তাদের জোর করে অস্ত্র ধরে তাদের গাড়িকে তুলে নিয়ে চলে যায়। রাতে র্যাব বাবুকে ছেড়ে দেয়। পরে সোমবার দুপুরে শুনলাম জাকিরকে নাকি অস্ত্র ও মাদকসহ মালনীছড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার র্যাব সদস্যরা!
যুবলীগ নেতা জাকিরুল আলম জাকিরকে সেটিং মামলায় অস্ত্র ও মাদক দিয়ে ফাসাঁনো হয়েছে বলে দাবি করেছে জাকিরের পরিবার। তারা বলেছেন- জাকির রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করলে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন হবে।
জাকির সিলেট মহানগর যুবলীগের সদস্য। তিনি গত ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হয়ে কুচাই ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।