সিলেটে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের মে দিবস পালন
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :
জাতীয় নিম্নতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, বাঁশখালিতে শ্রমিক হত্যার বিচার এবং করোনায় কর্মহীনদের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও আর্থিক সহায়তার দাবি নিয়ে সিলেটে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের ১৩৫তম মহান মে দিবস পালন।
মে দিবস উপলক্ষে করোনা মহামারীতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে গত শনিবার (১ মে) বিকেল সাড়ে ৪ টায় আম্বরখানায় মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলার আহবায়ক আবু জাফরের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-আহবায়ক প্রণব জ্যোতি পাল এর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন- শ্রমিক নেতা মামুন ব্যাপারী, রিক্সা, ব্যাটারি রিক্সা, টমটম শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের জেলা সংগঠক সিপন চন্দ, শ্রমিক নেতা আনোয়ার হোসেন জাহেদ, কাজল আহমদ প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন- মহান মে দিবস হলো শ্রমিকদের লড়াই সংগ্রামের ইতিহাসের এক অনন্য দিন। ১৮৮৬ সালের এই দিনে শিকাগো হে মার্কেটে শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা করে এবং শ্রমিক নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে আন্দোলন ধ্বংস করতে চেয়েছিল, কিন্তু শ্রমিকেরা সকল বাধা অতিক্রম করে- ৮ ঘণ্টা কাজ, ৮ ঘণ্টা বিনোদন, ৮ ঘণ্টা বিশ্রামের দাবি আদায় করে নেয়। কিন্তু আজও আমাদের দেশের অনেক কলকারখানায় শ্রমিকদের অমানবিক পরিশ্রম করতে হয়, ৮ ঘণ্টা শ্রমের দাবি আজও বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রে উপেক্ষিত। শ্রমিকের উপর নির্যাতন আজও বন্ধ হয়নি।
বক্তারা বলেন- গত ১৭ এপ্রিল ২১ চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে শ্রমিকেরা যখন রমজানে বিকেল ৫টার মধ্যে ছুটি, ইফতারের জন্য অর্থ বরাদ্দ, মাসের বেতন ৫ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে প্রদান, ছাঁটাই বন্ধ এবং ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের আইনানুযায়ী সমুদয় পাওনা পরিশোধসহ ১০ দফা যৌক্তিক দাবিতে শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশের বর্বর হামলা ও গুলিবর্ষণে ৫ জন শ্রমিক ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এবং অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হন। তাই বক্তারা মহান মে দিবসের চেতনায় শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন- বিকল্প কর্মসংস্থান ছাড়া রিক্সা, ভ্যান, ব্যাটারি রিক্সা, টমটম উচ্ছেদ করা চলবে না। অবিলম্বে রিক্সা, ভ্যান, ব্যাটারি রিক্সা, টমটম এর লাইসেন্স প্রদানের দাবি জানান।
বক্তারা, সিলেট নগরীর বন্দর- চৌহাট্টা সড়কে অবিলম্বে রিক্সা, ভ্যান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন- কর্মক্ষেত্রে নিহত শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমান (৪৮ লাখ টাকা) ক্ষতিপূরণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা, আবাসন, শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী সকল কালা- কানুন বাতিল ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, এবং করোনায় কর্মহীন সকল শ্রমিকের পূর্ণ বেতন-ভাতা এবং লকডাউনের এক মাসের খাবার ও নগদ সহায়তা প্রদান করা, করোনা সংক্রমিত শ্রমিকের চিকিৎসা ও মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা এবং বাঁশখালিতে শ্রমিক হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু‚ তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।