বোনাসের টাকায় শিক্ষার্থীদের সেলাই মেশিন দিলেন নায়েক সফি আহমেদ
সময় সিলেট ডেস্ক :
এবারও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীর জন্য নিজের ঈদের বোনাসের টাকা দিয়ে সেলাই মেশিন কিনে দিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের নায়েক মো. সফি আহমেদ। এছাড়া ইউসেপ ঘাসিটুলা স্কুলের সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঈদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
করোনাকালে গত বছরের দুই ঈদে ঈদের পোশাক ও খাদ্যসামগ্রী নিয়ে অসহায় শ্রমজীবী ও শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
শনিবার (৮ মে) বিকেলে নগরের ঘাসিটুলা এলাকায় ইউসেপ ঘাসিটুলা স্কুলের সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেলাই মেশিন ও ঈদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে খাদ্য সামগ্রী ও সেলাই মেশিন বিতরণ করেন- সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, জাগোনিউজ২৪ডটকম-এর নিজস্ব প্রতিবেদক (সিলেট) ছামির মাহমুদ।
‘মানবিক টিম সিলেট’র প্রধান সমন্বয়ক সিলেট মহানগর পুলিশের নায়েক মো. সফি আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- ইউসেপ ঘাসিটুলা স্কুলের শিক্ষক শাহিদা জামান। উপস্থিত ছিলেন- মানবিক টিম সিলেট’র সহ-সমন্বয়ক মুক্তার হোসেন মান্না।
বিতরণ করা খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে প্রতি প্যাকেটে ছয় কেজি চাল, এক লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি পেঁয়াজ, দুই কেজি আলু, এক কেজি ময়দা, এক কেজি চিনি, একটা নারকেল, এক প্যাকেট সেমাই, গুড়া দুধ, দারচিনি, এলাচিসহ গরম মসলা রয়েছে।
সেলাই মেশিন পেয়ে স্কুল শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার তমা আবেগতাড়িত কণ্ঠে বলেন- ‘টাকার অভাবে আমার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। খবর পেয়ে মানবিক টিম সিলেট’র প্রধান সমন্বয়ক সিলেট মহানগর পুলিশের নায়েক মো. সফি আহমেদ আমাকে ইউসেপ ঘাসিটুলা স্কুলে এনে ফিস ও বেতন ভাতা দিয়ে ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন। তিনি আমার পড়াশোনার খরচ দেয়ার পাশাপাশি এবার সেলাই মেশিনও কিনে দিলেন। এই মেশিন দিয়ে আমি এখন নিজে সেলাই করে অসচ্ছল পরিবারে কিছুটা সহায়তা করতে পারব।’
পুলিশের নায়েক সফি আহমেদ বলেন- ‘কঠোর লকডাউনে দীর্ঘ সময় করোনার সংক্রমণের কারণে সিলেটে কর্মহীন হয়ে পড়ায় নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্তরাও সঙ্কটে পড়েছেন। কারও কাছে হাত পাততেও পারছেন না অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের বাসাবাড়িতে গোপনে রাতের বেলাও খাদ্যসামগ্রী, নগদ অর্থ সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছি ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে। মহানগর পুলিশের কমিশনারসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও আমাকে এই কাজে নানাভাবে উৎসাহ দিচ্ছেন বলে এই কার্যক্রমটুকু চালাতে পারছি।’
সফি জানান- সেলাই মেশিন নিজের বোনাসের টাকা দিয়ে কিনে দিয়েছেন আর শনিবারের খাদ্যসামগ্রী বিতরণে একজন প্রবাসী ও তার স্ত্রী আর্থিক সহায়তা করেছেন।
নায়েক মো. সফি আহমেদ বর্তমানে সিলেট মহানগর পুলিশের মিডিয়া ও কমিউনিটি সার্ভিস বিভাগে কর্মরত আছেন। দেশে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে অসহায় হয়ে পড়া শিক্ষার্থী ও হতদরিদ্র মানুষের সাহায্য কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে পুলিশের নায়েক সফি আহমেদের ‘মানবিক টিম সিলেট’। খাদ্যসামগ্রী ও করোনা সচেতনতায় মাস্ক আর হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণে সীমাবদ্ধ নয় এই সংগঠনটি।
অসহায় শিক্ষার্থীদের খরচ বহন, এতিম এবং অসহায়দের মধ্যে ইফতার ও সাহরির খাবার দেয়া, করোনায় আক্রান্তদের প্লাজমা ও রক্ত দেয়া, মৃতদের দাফন-কাফন, আবার বিনা খরচে ওষুধ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাসাবাড়ি অথবা হাসপাতালে পৌঁছে দেয়ারও কাজ করছেন তিনি।