ছাতকে উপজেলা ভবন নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ : ভেঙ্গে পড়েছে পিলার
সময় সংগ্রহ :
সুনামগঞ্জের ছাতকে উপজেলা সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন ও হলরুম নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মাণ কাজের শুরুতেই ভেঙ্গে পড়েছে ফাইলিংয়ের জন্য বসানো পিলার।
পিলার নির্মাণের সময়ও নিম্নমানের পিলার নির্মানের অভিযোগ উঠেছিলো। সেসময় কয়েকদিন নির্মাণকাজ বন্ধ রেখে আবারো তারা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে পিলার নির্মাণ করেছে। ফলে পিলারগুলো পোতার আগেই ভেঙ্গে যাচ্ছে।
উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত ভবন ও হলরুম নির্মাণে ফাইলিংয়ের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমআই ট্রেডিং এন্ড কোম্পানি।
অভিযোগ রয়েছে- উপজেলা পরিষদ চত্বরে নিম্নমানের বালু-পাথর ও জং ধরা রড দিয়ে রাতের বেলা কাজ করে তারা পিলার নির্মাণ করেছে। কার্যাদেশ বহির্ভূতভাবে বালু-পাথর, সিমেন্ট ব্যবহার করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। টিলার নিম্নমানের ও স্বল্প মূল্যের মরা লাল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে পাইলিংয়ের পিলার নির্মাণে। ইতিমধ্যেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের প্রায় ১৮০টি পিলার নির্মাণ করে ফাইলিং কাজ শুরু করেছে। ফাইলিং কাজের প্রথম দিকেই ক’টি পিলার ভেঙ্গে গেলে তারা কাজটি বন্ধ করে দেয়। ভাঙ্গা পিলারের অংশ বিশেষ দ্রুত ট্রাকে করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন।
স্থানীয়দের অভিযোগ- পিলার নির্মানের সময় রাতের বেলা কাজ করেছে তারা। পিলার নির্মানে নিম্নমানের সামগ্রীর সাথে সিমেন্টের ব্যবহারও কম হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে। ফলে পিলারগুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে। এতে করে এখানে ভবন নির্মিত হলে এর স্থায়িত্ব কম হবে। উপজেলা পরিষদ চত্বরে এরকম অনিয়ম-দূর্নীতির বিষয় নিয়ে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের কোনো তদারকি পরিলক্ষিত হয়নি বলেও তারা অভিযোগ করেন। স্থানীয় একাধিক ঠিকাদারের সাথে আলোচনা হলে তারা এখানে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন।
পৌর কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন সুমেন জানান- উপজেলা সম্প্রসারিত ভবন ও হলরুম নির্মাণকাজের শুরু থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে। শুক্রবার থেকে মেসার্স এমআই ট্রেডিং এন্ড কোম্পানি ওই নিম্নমানের পিলার দিয়ে আবারো ফাইলিং কাজ শুরু করেছে। স্থানীয়রা একাধিকবার এ নিয়ে আপত্তি করলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্রুত নিম্নমানের মালামাল সরিয়ে নিয়ে যায়।
দু’একদিন পর ওই মালামাল এনে তারা আবারো কাজ করে। কাজের শুরু থেকেই এ ধরণের ছয়-নয় করে যাচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ছাতক উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত ভবন ও হলরুম নির্মাণ কাজে ৬ কোটি ৬ লক্ষ ৪২ হাজার ৭৭১ টাকার বরাদ্দ রয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ইতিমধ্যে ১৮০টি ফাইলিং পিলার তৈরি হয়ে যাওয়ায় পুরো কাজের গুনগত মান নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছে। ফাইলিংয়ের সময়ে ক’টি পিলারও ভেঙ্গে গেছে বলে একাধিক লোক জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আবুল মনসুর মিয়া জানান- ফাইলিংয়ের সময় পিলার ভেঙ্গে পড়েছে বিষয়টি তিনি জেনেছেন। শক্ত মাটির কারণে পিলার পোতার সময় পিলার ভেঙ্গে যেতে পারে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যাতে নিম্নমানের কাজ করতে না পারে সেদিকে কড়া দৃষ্টি রাখা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান- পিলার ভাঙ্গার বিষয় তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যাতে কোন ধরনের অনিয়ম করতে না পারে সে বিষয়ে তিনি কড়া দৃষ্টি রাখছেন।