দক্ষিণ সুনামগঞ্জে এক সড়কেই অতিষ্ঠ জনজীবন
সময় সংগ্রহ :
লিপসন আহমেদ, (সুনামগঞ্জ থেকে) : প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার সড়ক। দেখলে মনে হবে কোনো ক্ষেতের অংশ। অথচ এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে সুনামগঞ্জের ভাটিপাড়া, রফিনগর, ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়নের হাজারো মানুষ।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া বাজার হতে পার্শ্ববর্তী দিরাই উপজেলার বাংলাবাজার পর্যন্ত সড়কটি দীর্ঘদিন বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এতে করে সড়কটিতে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি দফতরে গিয়ে সড়কটি সংস্কারের জন্য আবেদন করেও লাভ হয়নি বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয়রা জানান- সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় স্থানে স্থানে ভেঙে এতো বেশি পরিমাণ কাদা সৃষ্টি হয়েছে যে, একটি গাড়ির অর্ধেক অংশ মাটিতে দেবে যায়। এ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে মিনি ট্রাক, পিকআপ, সিএনজি, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। এছাড়া স্কুল-কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ লোকজন উপজেলা ও জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী, অসুস্থ ও বয়স্ক লোকজনের যাতায়াত অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়- পাথারিয়া-বাংলাবাজার সড়কের বিভিন্ন অংশ এক একটি মিনি পুকুরে রূপ নিয়েছে। ছোটবড় যানবাহন প্রতিদিন গর্তের মধ্যে আটকা পড়ছে। কখনও যাত্রীবাহী গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে।
ভাটিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবু হানিফ চৌধুরী বলেন- ‘সরকার হাজার হাজার কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন করছে। অথচ পাথারিয়া-বাংলাবাজার সড়ক মাত্র সাড়ে ১১ কিলোমিটার দূরত্ব। এই রাস্তা দিয়ে জেলার তিন ইউনিয়নের মানুষ চলাচল করে। এই সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।’
মোটরসাইকেল চালক শাহ আলম বলেন- ‘সড়কটির স্থানে স্থানে ভেঙে বড় বড় গর্তে কাদা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। রাস্তাটি মেরামত করতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা মহিবুর তালুকদার বলেন- ‘সরকারের কত টাকা কতদিকে ব্যয় হচ্ছে। কিন্তু সাড়ে ১১ কিলোমিটার রাস্তা আমাদের জীবন অতিষ্ঠ করে দিচ্ছে। আমি সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই দ্রুত রাস্তাটি যেন মেরামত করা হয়।’
শিমুলবাঁক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জিতু বলেন- ‘পাথারিয়া-বাংলাবাজার সড়ক এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভাঙা রাস্তার ফলে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। আমরা এলাকাবাসীর ব্যানারে অনেকবার সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছি, কিন্তু আশ্বাসের পরও দাবিটি অধরাই রয়ে গেছে। যদি রাস্তাটি সংস্কার করা হয়, তবে এই এলাকার মানুষের জীবনের ব্যাপক উন্নতি হবে।’
দিরাই উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার হোসেন বলেন- ‘সড়কটি আবুরায় রূপান্তরিত করতে পরিকল্পনা মন্ত্রীর সুপারিশে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটা প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। আমি আশাবাদী এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি আবুরা সড়কে রূপান্তরিত হবে।’