নতুন বছরের বাজেট : আবার বাড়ল সিগারেটের দাম
স্টাফ রিপোর্টার :
নতুন বাজেট এলেই সিগারেটের দাম বাড়বে, এটাই যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের শুরুতেই অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সিগারেটের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন। ফলে ধূমপায়ীদের এখন থেকেই সিগারেট কিনতে বেশি খরচ করতে হবে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন- তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমানো এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে তামাক ও তামাকজাত পণ্যের ক্ষেত্রে নিম্নরূপ প্রস্তাব করছি। সিগারেটের নিম্নস্তরের ১০ শলাকার দাম ৩৯ টাকা ও তদূর্ধ্ব এবং সম্পূরক শুল্ক ৫৭ শতাংশ ধার্যের প্রস্তাব করছি। এ ছাড়া মধ্যম স্তরের ১০ শলাকার দাম ৬৩ টাকা ও তদূর্ধ্ব, উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার দাম ১০২ টাকা ও তদূর্ধ্ব, অতি উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার দাম ১৩৫ টাকা ও তদূর্ধ্ব এবং এই তিনটি স্তরের সম্পূরক শুল্ক ৬৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।
তবে স্থানীয় বিড়িশিল্পের ওপর সদয় হয়েছেন অর্থমন্ত্রী। বাজেট প্রস্তাবে তিনি বলেছেন- পূর্ববর্তী বছরের ন্যায় যন্ত্রের সাহায্য ব্যতীত হাতে তৈরি ফিল্টার বিযুক্ত বিড়ির ২৫ শলাকার দাম ১৮ টাকা, ১২ শলাকার দাম ৯ টাকা ও ৮ শলাকার দাম ৬ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করছি। ফিল্টার সংযুক্ত বিড়ির ২০ শলাকার দাম ১৯ টাকা ও ১০ শলাকার দাম ১০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৪০ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করছি।
এতে আরো বলা হয়েছে- পূর্ববর্তী বছরের ন্যায় প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার দাম ৪০ টাকা ও সম্পূরক শুল্ক ৫৫ শতাংশ এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের দাম ২০ টাকা ও সম্পূরক শুল্ক ৫৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।
এটি বর্তমান একাদশ সংসদের তৃতীয় বাজেট। এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাজেটে সম্মতি জানিয়ে স্বাক্ষর দেন।
দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘাটতি বাজেট হতে যাচ্ছে ৫০তম এ বাজেট। আলোচিত এই বাজেটে অনুদান’সহ ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৬ দশমিক ১ শতাংশ। অনুদান বাদ দিলে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।
একাদশ জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ (বাজেট) অধিবেশনে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন হবে। করোনাকালের দ্বিতীয় এই বাজেট অধিবেশনও সংক্ষিপ্ত হবে বলে জানা গেছে।
মহামারি করোনার ধাক্কা সামলাতে এবারের বাজেটে আয়ের দিকে বেশি নজর দিচ্ছে সরকার। সে জন্য বাজেটে মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩৬ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা বেশি।
চলতি অর্থবছরে এ আয়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা। যদিও বাজেটে মূল লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৩ কোটি টাকা। আয়ের মধ্যে রাজস্ব খাত থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক অনুদান নেওয়া হবে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।
বাজেট প্রসঙ্গে সম্প্রতি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন- দেশের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের বাঁচানোর লক্ষ্য নিয়েই ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট দেওয়া হবে। এ বাজেটে সবার স্বার্থ সংরক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক মানুষকে সঙ্গে রাখা হবে। আগামী বছর একই ধারা থাকবে।