বিয়ানীবাজারে পল্লীবিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনগণ : প্রতিবাদে মানববন্ধন
বিয়ানীবাজার সংবাদদাতা :
সিলেটের বিয়ানীবাজারে পল্লীবিদ্যুতের লাইন সংস্কারের নামে ঘোষণা দিয়ে প্রতিমাসে একাধিকবার সকাল-সন্ধ্যা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। পাশাপাশি প্রতিনিয়ত মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন উপজেলাবাসী। এ থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় না পেয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে গতকাল মঙ্গলবার (১৫ জুন) ভুক্তভোগি জনতা মানববন্ধন করেন। এ সময় কর্তৃপক্ষ এক সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার আশ্বাস দিয়েছেন। তা না হলে আন্দোলনকারিরা আগামীতে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার আভাস পাওয়া গেছে।
জানা যায়, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষে প্রবাসী অধ্যুষিত বিয়ানীবাজার উপজেলায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে ৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ‘চারখাই পাওয়ার গ্রীড স্টেশন’ স্থাপন করা হয়। এর ফলে বিয়ানীবাজার ছাড়াও জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ লাইন সংস্কার, সাবস্টেশন মেরামতসহ নানা অজুহাতে প্রতিমাসে ২-৩ বার সকাল-সন্ধ্যা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখে। এরপর আবার প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা লোডশেডিং করা হয়। এর ফলে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে মানুষ চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়েন। সীমাহীন বিদ্যুৎ যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে দীর্ঘদিন থেকে ভুক্তভোগীরা বিচ্ছিন্নভাবে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলেও কোন কাজ হয়নি। বরং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পায়। এ কারণে ভুক্তভোগি জনতা আলোচনার মাধ্যমে একত্রিত হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে। সহসাই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সমাধান না হলে যেকোন সময় তুঙ্গে উঠতে পারে আন্দোলন। এতে জনপ্রতিনিধিরাও মাঠে নামার আভাস পাওয়া গেছে।
এদিকে, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পল্লী বিদ্যুতের বিয়ানীবাজার নয়াবাজারস্থ জোনাল অফিসের সামনে সর্বস্তরের জনসাধারণের ব্যানারে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তারা সপ্তাহের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না করলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন। পর বিক্ষুব্ধ জনতা জোনাল অফিসের ডিজিএম ভজন কুমার বর্মণ এর সাথে সাক্ষাৎ করেন।
বিয়ানীবাজার পৌরশহরের ব্যবসায়ী আতিক উদ্দিন বলেন- করোনা মহামারির কারণে এমনিতেই ব্যবসায় মন্দাভাব চলছে। তার উপর পল্লীবিদ্যুতের অতিরিক্ত বিভ্রাটের কারণে জেনারেটর চালিয়ে ব্যবসা করে প্রচুর আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছি। তিনি বলেন- ব্যবসায়ীরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি চান।
ছাত্রলীগ নেতা সাইনুল আবেদীন বলেন- গরমের তীব্রতায় আমরা ঘরে বাইরে অস্বস্তিতে রয়েছি। তার উপর দিনরাত বিদ্যুৎ না থাকায় পরিবারের বৃদ্ধ ও শিশুদের অবস্থা একেবারে দুর্বিসহ। তিনি বলেন- দায়িত্বশীলরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন এক সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করা হবে। যদি এ সময়ে সমাধান না হয় তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচীর ডাক দেব।
এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার পল্লীবিদ্যুতের জোনাল অফিসের ডিজিএম ভজন কুমার বর্মণ বলেন- গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকলে গ্রাহকদের বিড়ম্বনা যে হয়, তা আমরা বুঝতে পারি। কিন্তু অনেক সময় টেকনিক্যাল কারণে সিলেট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়। তখন আমাদের কোন হাত থাকে না। তিনি আরও বলেন- বিদ্যুৎ নিয়ে আমরা রাস্তায় আন্দোলন দেখতে চাইনা। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে। তিনি ভুক্তভোগি জনগণকে একটু ধৈর্য্য ধারণের আহ্বান জানান।