‘অপুর মাহি’ এবার রাকিবের!
বিনোদন ডেস্ক :
একসময়ের ‘সিলেটী বধূ’- দেশের জনপ্রিয় নায়িকা মাহিয়া মাহি এবার সত্যিই অন্যের হয়ে যাচ্ছেন? তার বিয়ের গুঞ্জন এখন চারিদিকে। ফেসবুকে পোস্ট করা মাহির বিভিন্ন কথা আর ছবি নিয়ে নানা সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা করছেন ভক্ত-দর্শকরা।
গুঞ্জন উঠেছে- রাকিব সরকার নামের একজন ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিকের সঙ্গে নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছেন মাহি। রাকিব গাজীপুরে থাকেন। রাকিব-মাহিসহ আরও অনেককেই দেখা গেছে ফেসবুকে পোস্ট করা বিভিন্ন ছবিতে।
মাহির ফেসবুক লাইভেও পাওয়া গেছে রাকিবকে। একটি ছেলে ও মেয়ের মাথার পেছনের অংশের তোলা একটি ছবি রাকিব দিয়ে রেখেছেন তার কাভার ছবিতে। সেই ছবি দেখে অনেকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন। লিখেছেন- ‘সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধিতে ভরে থাকুক আপনাদের জীবন।’
রাকিব নামের এই ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক ১৫ জুন কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন ফেসবুকে। ছবিতে রাকিবসহ একটি ছেলে শিশু ও একটি মেয়ে শিশুকে দেখা যাচ্ছে।
সেই ছবির মন্তব্যের ঘরে লেখা- ‘বাবারা সবসময় এমনিভাবেই ছেলে-মেয়েদের পাশে ছায়া হয়ে থাকে… সত্যি আমাদের যাদের বাবা আছেন তারা অনেক ভাগ্যবান… আল্লাহ আমাদের সকলকে হেফাজতে রাখুক (আমিন)।’
মাহির বিয়ের গুঞ্জন শুরু গত ১১ জুন রাত থেকে। সেই রাতে তিনি মেহেদী রাঙা হাতে, কাতান শাড়ি আর নাকফুল পরে একটি ছবি পোস্ট করেন ফেসবুকে। সেই ছবির ক্যাপশনে লেখেন- ‘আলহামদুলিল্লাহ’।
এদিকে বিয়ের গুঞ্জনকে পুরোপুরি গুঞ্জন বলেই অভিহিত করছেন মাহিয়া মাহি। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন- ‘এসব গুঞ্জন। রাকিব ও আমি ভালো বন্ধু। আমাদের একটা সার্কেল তৈরি হয়েছে। আরেকটা অনুরোধ, এসব বাজে কথা বা গুঞ্জন ছড়াবেন না। আমি ও আমার বন্ধুরা এতে খুব বিব্রত হই।’
রাকিব সরকারও বিষয়টি গুঞ্জন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, সিলেটী অপুর সঙ্গে সংসার টেকেনি ঢালিউডের আলোচিত নায়িকা মাহিয়া মাহির। গত ২৩ মে রাত দুইটার দিকে বিচ্ছেদের খবর জানিয়ে এই অভিনেত্রী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।
২০১৬ সালের ২৫ মে মাহি-অপু জমকালো আয়োজনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। মাহমুদ পারভেজ অপু সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কদমতলি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের ছেলে। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। বড় ভাই লন্ডন প্রবাসী এবং বাকি দুই ভাই লেখাপড়া করছেন। অপু যুক্তরাজ্য থেকে কম্পিউটার প্রকৌশল নিয়ে পড়ালেখা করে এখন তার বাবার কয়লা ব্যবসা ও দুটি ইটভাটা দেখাশুনা করেন।
জানা গেছে, মাহি-অপু বেশ কিছুদিন ধরেই আলাদা থাকা শুরু করেন। ব্যক্তিগত কিছু বিষয়ের বোঝাপড়া না হওয়ায় সম্প্রতি তাঁরা বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। বিচ্ছেদের খবর চাউর হওয়ার বেশ কিছুদিন ধরেই মাহি ফেসবুকে মন খারাপের স্ট্যাটাস দিচ্ছিলেন। সর্বশেষ ২৩ মে রাতে তিনি স্ট্যাটাসে লেখেন- ‘এই পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষটার সাথে থাকতে না পারাটা অনেক বড় ব্যর্থতা।’ পরে মাহি শ্বশুরবাড়ির লোকদের কাছ থেকেও ক্ষমা চেয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সেদিন মাহি গণমাধ্যমকে বলেন- ‘আমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষটার কাছ থেকে আলাদা হয়েছি। এ মুহূর্তে আমার এর বেশি কিছু বলার মতো অবস্থা নেই।’
ঈদের আগে মাহিয়া মাহি সাংবাদিকদের জানান- তিনি এবং তাঁর স্বামী আলাদাভাবে নিজেদের বাসায় ঈদ করবেন। ঈদের নামাজ পড়ে তাঁর স্বামী অপু মাহমুদ চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাহিদের বাসায় আসবেন। পরে তাঁদের ঈদ শুরু হবে। শেষ পর্যন্ত এই ঈদে তেমনটা হয়নি। হঠাৎ এর মধ্যেই তাঁদের বিচ্ছেদের খবর প্রকাশ হলো।
আপনারা কবে থেকে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মাহি সাংবাদিকদের বলেন- ‘আমরা আলাদা হয়ে গেছি সত্য; কিন্তু কবে, কখন থেকে- এসব বলতে চাইছি না।’
মাহি এবারের ঈদ করতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে তাঁর গ্রামের বাড়িতে যান। সেখানে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। এই সময়ে তিনি কয়েকটি স্ট্যাটাস দেন। একটি স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন- ‘এরপরও আমরা দুজন মুখোমুখি হব, কেউ কারও দিকে না তাকিয়েও পেট ভরে দুজন দুজনকে দেখব, ঘ্রাণ নেব, স্পর্শ করব।’
একটি স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন- ‘মানুষের জীবনে অনেক কিছুই ঘটে। অনেক কিছু ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে। এইটুকু বলব- আমি অপুকে সম্মান করি। আমাদের মধ্যে ব্যক্তিগত বোঝাপড়া নিয়ে কিছু বিষয়ে সমস্যা ছিল। যেটা হয়তো আমাদের সম্পর্ক টিকতে দিল না। হয়তো আরও কিছু বিষয় ছিল। আপনাদের কাছে অনুরোধ, তাঁর ও আমার কোনো অসম্মান হোক তেমন কিছু চাই না। আর আমরা কেন বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেটা বলতে পারছি না।’
মাহি-অপুর পরিবারের সম্মতিতে ২০১৬ সালের ২৫ মে তাঁদের বিয়ে হয়। আগামী পরশু (২৫ মে) হতে যাচ্ছিলো তাঁদের পঞ্চম বিবাহবার্ষিকী। এর ঠিক তার দুদিনে আগে তাঁদের বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত জানালেন মাহিয়া মাহি। বিয়ের মাসেই বিচ্ছেদ ঘটলো মাহি-অপুর।
এদিকে, বিচ্ছেদের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সংবাদ মাধ্যমকে পারভেজ মাহমুদ অপু জানিয়েছিলেন- ‘জাগতিক বিভিন্ন কারণে হয়তো আমাদের একসঙ্গে থাকা হবে না, কিন্তু আমরা জীবনের বাকিটা সময় একে অপরকে ভালোবেসেই যাবো। মাহির প্রতি আমার যে শ্রদ্ধা-মমত্ববোধ ছিলো, সেটি সব সময় থাকবে। আমার ক্ষেত্রে তার মনোভাবও এমন। আমার প্রতিও মাহির যথেষ্ট শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা রয়েছে।’
তার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়েছিলো ২৩ মে বিকেল ৩টার দিকে। এসময় অপু ‘দুজনের সম্মতিতেই আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি’ উল্লেখ করে বলেছিলেন- ‘পারিবারিক বা কোনো মহলের চাপ নয়, আমরা আমাদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্যই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বরং এ সিদ্ধান্তে আমার পরিবারের লোকজন আপসেট।’