সিলেটে ভিসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালু রাখার দাবি শিক্ষার্থীদের
স্টাফ রিপোর্টার :
জরুরি সেবার আওতায় নিয়ে এসে যুক্তরাজ্যের ভিসা সেবাদানকারী দুটি প্রতিষ্ঠান আইওএম এবং ভিএফএস গ্লোবাল এর কার্যক্রম চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ও গমনের অপেক্ষায় থাকা শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৯ জুন) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শাহরিয়ার জামান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন- আমরা যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছি। প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে গমন করেন যার একটা বড় অংশই যায় সেপ্টেম্বর সেশনে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর ধরেই ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও তাদের কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছুতে পারছে না।
তিনি বলেন- যুক্তরাজ্যে গমনেচ্ছু শিক্ষার্থীদের সেবাদানকারী দুটি প্রতিষ্ঠান আইওএম এবং ভিএফএস গ্লোবাল অনেকদিন বন্ধ থাকার পর মাস খানেক আগে থেকে আবার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যার ফলে ভিএফএস-এ এখন এপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে ২ মাস পর। এমন অবস্থায় যদি আগত লকডাউনে এই দুই প্রতিষ্ঠানকে জরুরিসেবার আওতাধীন করে কার্যক্রম চালু না রাখা হয় তা হলে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
তিনি বলেন- তাদের কার্যক্রম চালু না রাখলে প্রথমত শতশত ছাত্র-ছাত্রীদের পাসপোর্ট ভিএফএসএ আটকানো আছে এবং অনেকেই পাসপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। এতে করে অনেকের ভর্তি সেশন মিস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া প্রতিবছর প্রায় ৯০,০০০ শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যায়, যার ৭০% এরও বেশি যায় সেপ্টেম্বর সেশনে। আগের লকডাউনগুলোর কারণে গত জানুয়ারি এবং মে সেশনের হাজার হাজার শিক্ষার্থী তাদের ফাইল জমা দিতে পারেনি। এমন অবস্থায় বর্তমান লকডাউনের কারণে যদি আবারো ভিএফএস বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সমস্যা আরও প্রকট হয়ে দেখা দিবে।
লিখিত বক্তব্য প্রদানকালে ভিসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানিয়ে বেশ কিছু কারণ উল্লেখ্য করা হয়।
তিনি বলেন- বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী ৫-৬ মাস যাবত অনলাইনে ক্লাস করছে। এতে করে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অনেক সময় লোডশেডিং এবং নেটওয়ার্ক প্রবলেম এর কারণে অনেকেই ক্লাস মিস করছে যা পরবর্তীতে পরীক্ষার ফলাফলে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। এছাড়া ছাত্ররা লক্ষ লক্ষ টাকা টিউশনফি এর মধ্যেই পাঠিয়ে দিয়েছে এবং অনলাইনে ক্লাস করছে কিন্তু যদি এতদিন অপেক্ষা করার পর ভিসা না হয় তা হলে প্রেরিত টিউশানফির ২৫% কেটে নিবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
তিনি বলেন- এমন অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা এরমধ্যে পাসপোর্ট জমা করেছে এবং কিছুদিনের মধ্যেই তাদের ভিসা হবে। এমতাবস্থায় ভিএফএস বন্ধ হলে তারাও তাদের পাসপোর্ট পাবে না। এছাড়া অনেক শিক্ষার্থী টিউশন ফি পাঠিয়ে আইওএম থেকে টিবিটেস্ট এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রেখেছে। এখন যদি আইওএম তাদের কার্যক্রম বন্ধ রাখে তাহলে লকডাউন পরবর্তী সময়ে মেডিকেল টেস্ট সম্পন্ন করে অন্যান্য প্রসিডি ওর শেষ করে কাক্সিক্ষত সেশনে ভর্তির সুযোগ নাও থাকতে পারে।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তানও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছাত্রদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন- শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা পরিবার নিয়ে যাচ্ছে তারা আলাদা আলাদাভাবে প্রত্যেকে সদস্যের জন্য হেলথ ইনস্যুরেন্স পে করতে হয় যা লক্ষাধিক টাকার কাছাকাছি। এমতাবস্থায় তারা যদি তাদের কাঙ্খিত সেশনে যেতে না পারে সেক্ষেত্রে তাদের নতুন করে আবারো এই হেলথ ইনস্যুরেন্স ফি দিতে হবে যা অনেকের জন্যেই অসম্ভব। এমনকি প্রদানকৃত অর্থ ও ফেরত পেতেও অর্ধ বছর সময় লেগে যায়। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর কথা ভেবে সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিষ্ঠান দুটির কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- তুহিন ইবনে খালেক, সুজন আহমেদ, সারোয়ার আহমেদ প্রমুখ।