এ কেমন নিষ্ঠুর স্বামী! আগুনে পুড়িয়ে মারলো ঘুমন্ত স্ত্রীকে
স্টাফ রিপোর্টার :

শেষ রক্ষা হলো না এক সন্তানের জননী রহিমার। বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েও পার পেলেন না তিনি। ঘুমন্ত রহিমার শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে নিষ্ঠুর স্বামী শিপন আহমদ। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে। তবে গ্রেফতার হয়েছে বর্বর এ ঘটনার হোতা শিপন।
আজ রোববার (৪ জুলাই) ভোররাতে এ ঘটনা ঘটেছে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন- ‘পেট্রল ঢেলে রহিমাকে পুড়িয়েছে তার স্বামী। ঘটনার পরই অভিযুক্ত শিপনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। থানায় মামলা দায়ের করেছেন রহিমার বাবা।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে- দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের রফিক উদ্দিনের মেয়ে রহিমা বেগমের সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের আরেঙ্গাবাদ গ্রামের মুকুল মিয়ার ছেলে শিপন আহমদের। বিয়ের পর পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রহিমার সঙ্গে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের ঝগড়া হতো। এতে স্বামী ও তার স্বজনরা রহিমাকে নির্যাতন করতো।
বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কয়েকবার সমাধান করে দিলেও ফের ঝগড়া লেগে থাকতো। একপর্যায়ে স্বামী ও তার স্বজনদের নির্যাতন সইতে না পেরে প্রায় সাত মাস আগে এক সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি হরিপুর গ্রামে চলে আসেন রহিমা। সন্তানকে দেখার সুযোগে প্রায় শ্বশুর বাড়িতে আসতেন রহিমার স্বামী শিপন আহমদ।
গত শনিবার (৩ জুলাই) শিপন সন্তানকে দেখতে শ্বশুর বাড়িতে আসেন। রাতে সেখানে ঘুমান তিনি। কিন্তু ভোররাত পাঁচটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী রহিমা বেগমের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন শিপন। ঘটনার পরই পালিয়ে যান তিনি। রহিমার চিৎকার শুনে স্বজনরা দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাকে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ফয়জুল ইসলাম বলেন- ‘সকাল সাতটার দিকে রহিমা বেগমকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার হাত-মুখসহ শরীরের ৬৩ শতাংশ পুড়ে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে তাকে।’
স্থানীয় দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য সাহেদুল ইসলাম সুমন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন- ‘রহিমার স্বামী শিপন ও তার পরিবারের লোকজন প্রায়ই রহিমাকে নির্যাতন করতেন। বিষয়টি কয়েকবার বসে সমাধান করে দিয়েছি আমরা। কিন্তু নির্যাতন সইতে না পেরে প্রায় সাত মাস আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে চলে যান রহিমা। তিনি বলেন- সংসারে রয়েছে এক সন্তান তাদের।




