ঈদের পিঠা করতে গিয়ে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন : পুড়ল ৬৩টি ঘর
সময় সিলেট ডেস্ক :
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লেগে ৬৩টি বসতঘর পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় ৪-৫ জন আহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিক তাঁদের কোনো নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
রোহিঙ্গাদের ধারণা- গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে অনেক রোহিঙ্গা পরিবার চালের পিঠা’সহ নানা ধরনের আয়োজন করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে উখিয়া পানবাজার–সংলগ্ন বালুখালী ক্যাম্প-৯ এইচ-২ ব্লকে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটনা ঘটে। গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বালুখালী ক্যাম্প-৯–এর ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান (রোহিঙ্গা দলনেতা) আব্দুল আমিন।
চেয়ারম্যান আব্দুল আমিন বলেন- মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হঠাৎ ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে এপিবিএনের সদস্য, উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের দল’সহ ক্যাম্পের লোকজন দ্রুত এগিয়ে আসেন। এ শিবিরে ৮ হাজার ৬০০ পরিবারের ৩৩ হাজার লোকের বসবাস। এর মধ্যে এইচ-২ ব্লকে ১১৫টি বসতঘর রয়েছে। আগুন দেখে রোহিঙ্গারা চিৎকার করলে আশপাশে থাকা এপিবিএনের সদস্য, স্বেচ্ছাসেবক ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের সহায়তায় ঘণ্টাখানেক পরে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় ৬৩টি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন নেভাতে গিয়ে ৪-৫ জন আহত হন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় কয়েকজন শিশু নিখোঁজ রয়েছেন।
কয়েকজন রোহিঙ্গা মুঠোফোনে বলেন- কোরবানির ঈদ সামনে রেখে চালের পিঠা’সহ কিছু আয়োজন আগাম করতে গিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার (ইঞ্জিল চুলা) থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনো অধিকাংশ রোহিঙ্গা নারীরা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার জানেন না। তাঁরা মিয়ানমারে পাহাড় জঙ্গল থেকে কাঠ সংগ্রহ করে আগুনের চুলা ব্যবহার করতেন। এ কারণে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজার-৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) শিহাব কায়সার খান বলেন- বালুখালী ক্যাম্পে আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান এপিবিএনের সদস্যরা; পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসকেও খবর দেওয়া হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে আগুন লাগার কোনো কারণ জানা যায়নি। আগুনের কুণ্ডলী দেখে ছোটাছুটি করতে গিয়ে কয়েকজন শিশু নিখোঁজ রয়েছে বলে রোহিঙ্গা নেতাদের কাছ থেকে শোনা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালী’সহ পাঁচটি আশ্রয়শিবিরে আগুনে ১০ হাজার বসতি পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ৬ শিশুসহ অন্তত ১১ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়। আহত হয় প্রায় ৪৫০ জন, গৃহহীন হয়েছিল ৪৫ হাজার মানুষ। নিখোঁজ ছিল অন্তত ৪০০ জন।