আম্বরখানায় সিসিকের ‘ঝুনঝুনি চত্বর’ : কাউন্সিলর ‘বিব্রত’
সময় সংগ্রহ
সিলেট নগরীর অপরিকল্পিত উন্নয়ন নিয়ে বিভিন্ন সময়েই সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত নগরের বিভিন্ন মোড়ে কোনো পরিকল্পনা ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়াই স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে নগরবাসীর মধ্যে। সিলেটের ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এবার এই সমালোচনায় যুক্ত হয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশেনেরই (সিসিক) এক কাউন্সিলর। সিলেট নগরের আম্বরখানা মোড়ে নির্মাণাধীন একটি স্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিসিকের ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।
আম্বরখানা মোড়ে সম্প্রতি একটি স্থাপনা নির্মাণ করছে সিসিক। এই স্থাপনা দেখতে অনেকটা শিশুদের খেলনা ‘ঝুনঝুনির’ মতো হওয়ায় অনেকেই ব্যঙ্গ করে এই স্থাপনার নাম দিয়েছেন ‘ঝুনঝুনি চত্বর’। এই স্থাপনা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা চলছে। বুধবার এমন অপরিকল্পিত স্থাপনার সমালোচনা করেন কাউন্সিলর কয়েস লোদীও। আম্বরখানা তার ওয়ার্ডেরই আওতাধীন। তবে এই স্থাপনাটিকে অরুচিকর উল্লেখ করে এটি নির্মাণ করায় নিজে বিব্রত বলে উল্লেখ করেন কয়েস লোদী।
বুধবার দুপুরে এ ব্যাপারে ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে কয়েস লোদী লিখেন-
“সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৪ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ-পূর্ব সীমানা শুরু হয়েছে আম্বরখানা থেকে। আম্বরখানা জামে মসজিদ এই ওয়ার্ডভুক্ত এলাকা। সেই আম্বরখানা সিলেট নগরীর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ওসমানী বিমান বন্দর থেকে সিলেট নগরে প্রবেশের পর প্রথম একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এই মোড় থেকে পূর্ব দিকের রাস্তা চলে গেছে শাহী ঈদগাহ হয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও এমসি কলেজ। সেখান থেকে সিলেট সেনানিবাস, তামাবিল সীমান্ত, জাফলং। পশ্চিমের রাস্তা ধরে চলে যাওয়া যায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, শিল্প নগরী ছাতক ও সুনামগঞ্জ জেলা সদরে। আর দক্ষিণে সোজা কিছু দূর পাড়ি দিলেই দরগা-ই-হযরত শাহ জালাল (রহ) ও সিলেট নগরের সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সেই আম্বরখানা পয়েন্টে সিলেট সিটি কর্পোরেশন একটি দৃষ্টিকটু, অর্থহীন, অরুচিকর স্থাপনা নির্মাণ করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই কিম্ভুত আকৃতির স্থাপনার নামকরণ হয়েছে “ঝুনঝুনি চত্বর”। যা নিয়ে মানুষ হাসি তামাশা করছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সূচনাকাল থেকে নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে এই ঝুনঝুনি নির্মাণে আমি বিব্রতবোধ করছি।
সিলেট সিটির সৌন্দর্য্যবর্ধনের জন্য কাজ করতে আগ্রহী স্থপতি পাওয়া যাবে। উন্মুক্তভাবে ডিজাইন দেয়ার আহবান জানালে অনেক নবীন স্থপতি নিজের মেধা খাটিয়ে সিলেটের ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নকশা প্রদান করবেন এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। সেই সব নকশা থেকে সিলেট নগরের বিভিন্ন মোড়ের জন্য উপযুক্ত স্থাপনা দেশবরেণ্য স্থপতিরা বাছাই করতে পারেন। সিলেট নগরের জন্য এমন সুযোগ থাকা সত্বেও খামখেয়ালীপনার খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে। যা কোন ভাবেই সিলেটবাসীর জন্য ভালো নয়।”