দিরাইয়ে সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় মামলা
দিরাই সংবাদদাতা
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আহত সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার একদিন পর গতকাল বুধবার (১৮ আগস্ট) বিকেলের দিকে দিরাই থানায় তিনি মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়ার দুই পুত্র ট্রিপল মার্ডার মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি উজ্জল মিয়া ও তাজবির মিয়াসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে ওসি আজিজুর রহমান জানান- সাংবাদিকের উপর হামলার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়ার ছেলে ট্রিপল মার্ডার মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি উজ্জল বাহিনীর হাতে সস্ত্রাসী হামলার শিকার হন দিরাই প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক আবু হানিফ চৌধুরী।
গত মঙ্গলবার বিকেলের দিকে পৌর শহরের দাউদপুর গ্রামে পুলিশের সামনেই এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিককে প্রথমে দিরাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর কর্তব্যরত ডাক্তারের পরামর্শে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী জাতীয় দৈনিক কালেরকন্ঠ প্রত্রিকার দিরাই-শাল্লা ও দৈনিক সুনামগঞ্জ খবর প্রত্রিকার দিরাই প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।
এর আগে উজ্জল ও তার বাহিনীর হাতে হামলার শিকার হন সাংবাদিক এমরান হোসেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন- তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বিগত ২১ জুলাই রাতে দিরাই বাজারে উজ্জল ও তার বাহিনীর সদস্যদেরকে পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, দাউদপুর গ্রামের হাজী আবু জাহের চৌধুরীর বাসায় তার মেয়ে সাহেরা খানম চৌধুরী ও সৎভাই জুলহাস গংদের মধ্যে বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন সাহেরা খানমের ছেলে সোহেল মিয়া তাদের দ্বিতল বাসায় বৈদ্যুতিক মিটারের সংযোগ দিতে গেলে সৎ মামা জুলহাস ও তার লোকজন চড়াও হয়ে উঠে এবং হুমকি ধামকি দেয়। এরপর সোহেলের বোন দিলারা খাতুন পরিস্থিতি খারাপ দেখে দিরাই থানা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে দিরাই থানার এসআই সজিব দত্ত ও এসআই রাজেশের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনা স্থলে যায়।
এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এর কিছুক্ষণ পর উজ্জলের নেতৃত্বে তার বাহিনীর লোকজন জুলহাসের পক্ষ হয়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাহেরা খাতুনের বাসায় তান্ডব চালায়। এ সময় সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী ঘটনার ছবি তুলতে গেলে তার উপর উজ্জল ও তার বাহিনীর লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়। স্থানীয়দের সহযোগীতায় হামলার শিকার সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হয়।
আহত সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী জানান- ‘খবর পেয়ে আমি সংবাদ সংগ্রহের কাজে ঘটনাস্থলে যাই। এসময় উজ্জল বাহিনীর তান্ডবের ছবি তুলতে গেলে কোন কিছু বুঝার আগেই চন্ডিপুর গ্রামের মোশাররফ মিয়ার ছেলে উজ্জল ও আছাব উদ্দিনসহ কয়েকজন পুলিশ থাকাবস্থায় আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়।’
প্রত্যক্ষদর্শী দিলারা খাতুন জানান- আমার ভাই সোহেল সরদার বাসায় মিটার লাগাতে গেলে, জুলহাস মামা ভাইয়ের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমের চেষ্ঠা চালায় এ সময় আবস্থা খারাপ দেখে পুলিশে খবর দেই, পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে, এরপর জুলহাস মামার শ^শুর চন্ডিপুররের আছাব উদ্দিন মিয়া উজ্জলরে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে বলে, তারা ঘটনাস্থলে এসেই উপস্থিত সাংবাদিক ও আমার ভাইয়ের উপর হামলা চালায়।
দিরাই প্রেসক্লাবের সভাপতি হাবিবুর রহমান তালুকদার বলেন- ‘সাংবাদিক আবু হানিফের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনার নিন্দা জানাই। জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে উল্লেখ করে বলেন অন্যতায় সাংবাদিকরা কঠোর আন্দেলনে যাবে।’