ফের একমঞ্চে বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতারা
সময় সংগ্রহ
যুদ্ধাপরাধের বিচারে বেশ কয়েকজন জামায়াত নেতা দণ্ডিত হওয়ার পর থেকেই রাজনীতির মাঠে একান্ত সঙ্গী জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি কোণঠাসা হয়ে পড়ে। তবে বিএনপিও কৌশলী হয়ে একলা চলো নীতিতে সভা সমাবেশ করে।
জামায়াত থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলার চেষ্টা করে বিএনপি। দীর্ঘ একটা বিরতি থাকলেও শেষ পর্যন্ত রোববার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে দেখা যায় জামায়াতের সেক্রেটারি ও বিএনপির মহাসচিবকে।
চলতি বছর ১৪ জানুয়ারি হেফাজত নেতা নূর হোসাইন কাসেমীর স্মরণ সভা উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপি ও জামাতকে একই মঞ্চে দেখা যায়। এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে বেগম জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের অনুষ্ঠানে অংশ নেয় জামায়াত।
জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী মুক্তি পরিষদ আয়োজিক নাগরিক সমাবেশে দুই দলের শীর্ষ নেতাদের একই মঞ্চে দেখা যায়। তাদের কথার সুরও ছিল একই রকম। সকাল দশটায় শুরু হওয়া ওই অনুষ্ঠান থেকে কারাবন্দী সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর মুক্তি দাবি করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিথ ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। এছাড়া প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
অনুষ্ঠানে জামায়াতের সেক্রেটারি বলেন- সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়। কোনো দেশে স্বৈরাচারী শাসক থাকলে মানুষের মৌলিক অধিকার থাকেনা। যাদের কোনো নৈতিক ভিত্তি ছিলনা তাদের একমাত্র অবলম্বন কালো আইন।
এসময় সরকারের ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের সমালোচনা করেন যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে বিতর্কিত জামায়াতের শীর্ষ নেতা মিয়া গোলাম পরোয়ার। এসময় তিনি বলেন-‘পুলিশ ছাত্রলীগের মতো ক্যাডারে পরিণত হয়েছে’। সরকারের পায়ের নীচে কোনো মাটি নেই বলেও মন্তব্য করেন জামায়াতে সেক্রেটারি।
এসময় যুদ্ধাপরাধের মামলায় দণ্ডিত দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী ও দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বেগম জিয়ার মুক্তি দাবি করেন জামায়াতের সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন- মাওলানা সাঈদী, দেশনেত্রী বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে তার প্রতিটি মামলা মিথ্যা। এসব মামলা একদিন সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার হবে।
এসময় সাংবাদিকদের জাতীয় সমাবেশে করার আহ্বান জানান জামায়াতের ওই শীর্ষ নেতা। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদ নেতাদের আশ্বস্ত করে বলেন- আগামী দিনে সভা সমাবেশে জামায়াত পাশে থাকবে।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন- বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৩৫ লক্ষ মামলা করা হয়েছে। তৃণমূলের একজন কর্মীও মামলা থেকে রেহাই পায়নি। সরকারের পায়ের নীচে মাটি নেই বলেই জিয়ার মাজারে জিয়ারতও সহ্য করতে পারেনা। ১৫ হাজারের মতো কর্মী সেখানে উপস্থিত হয়েছে এতেই সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। জনগণকে সাথে নিয়ে অভ্যুত্থানের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে আন্দোলনে তরুণ ও যুবকদেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বিএনপির মহাসচিব বলেন- ‘সরকার প্রকৃত পক্ষে একটা পুতুল সরকারে পরিণত করেছেন। চুরি বা দুর্নীতি ছাড়া সরকারের কোনো সাফল্য নেই। দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে সরকার।’
মির্জা ফখরুল তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন- তরুণ সমাজকে সামনে এগিয়ে আসতে হবে, সব আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটায় তরুণরা। ছাত্র আন্দোলনে যে শূন্যতা তৈরী হয়েছে তা পূরণ করতে হবে। এসময় মির্জা ফখরুল ব্যর্থ সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্বাচন দেয়ার দাবি করেন।