‘সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চল রক্ষায় ভারতের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন’
সময় সংগ্রহ
অবিলম্বে সিলেট সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওর অঞ্চলকে রক্ষা করতে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের অপরিকল্পিত এবং অনিয়ন্ত্রিত খনিজ সম্পদ আহরণ, বনাঞ্চল ধ্বংস হওয়া ও পাহাড়ধস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ভারতের সঙ্গে বিশেষ ব্যবস্থায় আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন বলে মনে করছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।
সোমবার (২৩ আগস্ট) বাপা সদস্যরা সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের রজনীলাইন, চাঁনপুর এলাকা পরিদর্শন করেন।
প্রতিনিধিদল পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন- ভারতের সীমান্তঘেঁষা উপজেলার উত্তর বড়ধল ইউনিয়নের চাঁনপুর, রজনীলাইন, কৃষিজমি ও জলাশয় পাথর বালির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়- শুধু চাঁনপুর, রজনীলাইন নয় রাজাই, মারাম, বরুঙ্গাচরা ও শান্তিপুরসহ মোট ছয়টি গ্রামের লোকজনের ফসলি জমি ও বিল বালুতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চাঁনপুর গ্রামটি একেবারে মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে হওয়ার কারণে গ্রামের বাড়িঘরের আঙিনা, এলাকার বাজার, গ্রামের রাস্তা, মসজিদ, স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণসহ সবখানেই বালুর বেশি স্তর পড়েছে। বাড়িঘর হারানোর পাশাপাশি এলাকার মানুষের সর্দি-কাশি, অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টজনিত বিভিন্ন রোগ প্রতি বছর বৃদ্ধি পেতেই থাকে।
২০০৮ সালে বাপার একটি প্রতিনিধি দল ওই এলাকা পরিদর্শন করে। সে সময়ে যে অবস্থা লক্ষ্য করা গিয়েছিল এখন তা আরও ব্যাপক আকারে বিস্তৃতি লাভ করেছে। এ অবস্থায় ভারতের খাসিয়া পাহাড় থেকে বালি ও পাথর আসা বন্ধ না হলে অচিরেই টাঙ্গুয়ার হাওরসহ এলাকার বিস্তৃত জলাভূমি ও হাওর ভরাট হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে পচাশোল বিল’সহ আরও অনেক বিল বালির নিচে চাপা পড়েছে, এখানে আর জলাভূমির কোনো চিহ্ন নেই।
পরিদর্শন শেষ দেশের ভেতরে যেসব ছড়া, খাল, নদী, জলাশয় ও কৃষিভূমি পাথর ও বালিতে নিমজ্জিত হয়েছে তা সুপরিকল্পিতভাবে উত্তোলনের মাধ্যমে যথাযথভাবে ক্ষতিগ্রস্ত নিরূপণ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাপা।
বাপা কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিলের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও বাপা সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, বাপা হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল, যুব বাপার সদস্য দেওয়ান নূরতাজ আলম আদিবাসী নেতা এন্ড্রু সলমার, ইউপি সদস্য মোহাম্মদ সম্রাট মিয়া, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মোতাল্লিব, চাঁনপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি, মোহাম্মদ রাজা মিয়া, ওই এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন প্রমুখ।