জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
সময় সিলেট ডেস্ক
আজ ১২ ভাদ্র। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের আজকের দিনে (১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র) তিনি ঢাকায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ‘বিদ্রোহী’ কবি হিসেবে ব্যাপক পরিচিত হলেও তিনি গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, সংগীত রচনায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন। সংগীতজ্ঞ হিসেবেও তিনি খ্যাতির শিখরে উঠেছিলেন। কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা, গান ও অন্য রচনা শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী জনগণের প্রেরণার উৎস ছিল। তাঁর লেখা ‘চল চল চল’ গানটি বাংলাদেশের রণসংগীত।
অল্প বয়সে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা রচনার মাধ্যমে আলোড়ন তুলে সাহিত্যাঙ্গনে পা রেখে নজরুল ক্রমাগত সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। নজরুলের গান বাংলা সংগীতজগতে অমূল্য সংযোজন। তিনি শ্যামাসংগীত, গজল, হামদ-নাতসহ অনেক ধর্মীয় ভাবধারার গান লিখলেও ধর্মান্ধতা, কূপমণ্ডূকতা, কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ছিল তাঁর দৃঢ় অবস্থান।
কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুনের অভাব-অনটনের সংসারে জন্ম নিয়ে ‘দুখু মিয়া’ সারা জীবন দুঃখমোচনের সংগ্রাম করেছেন। কোনো প্রতিকূলতা কিংবা লোভ-লালসার কাছে মাথা নত করেননি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উদ্যোগ নিয়ে ১৯৭২ সালের ২৪ মে সপরিবারে অসুস্থ কবিকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। কবি পরিবারের জন্য ধানমন্ডিতে একটি বাড়ি দেওয়া হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবির বাকি জীবন ঢাকায় কাটে। একটি গানে কবি ‘মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই’ বলে আকুতি প্রকাশ করেছেন। মৃত্যুর পর তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বেশ কিছু কর্মসূচি নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আজ সকাল সোয়া সাতটায় ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা’সহ কবির সমাধিতে গমন, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতিহা পাঠ করা হবে। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় প্রশাসনিক ভবনে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বক্তব্য রাখবেন নজরুল বিশেষজ্ঞ জাতীয় অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।
এ ছাড়া, জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বাদ ফজর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরআনখানি অনুষ্ঠিত হবে।