বিসিবির বুঝতে বুঝতেই চলে গেল চার বছর
সময় সিলেট ডেস্ক
যে ক্রিকেট বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে অন্য পরিচিতি, সারা দেশে সেই খেলাটার সুষম উন্নয়নে দেশের ক্রিকেটকে বিকেন্দ্রীকরণের দাবিটা পুরোনো। সেই দাবি অনুযায়ী আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠনের প্রতিশ্রুতি অনেক আগে থেকেই দিয়ে আসছেন বিসিবির শীর্ষস্থানীয় কর্তারা।
২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর নির্বাচনে জিতে ফের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হওয়ার পরই নাজমুল হাসান পাপনও প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন- ‘আমাদের প্রথম কাজ হবে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠন। চেষ্টা করব আগামী ছয় মাসের মধ্যে এটা চূড়ান্ত করে ফেলতে।’
ছয় মাস পেরিয়েছে অনেক আগেই। প্রায় চার বছর পেরিয়ে আরেকটা নির্বাচন চলে আসছে সামনে; বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ এখনো পারেনি কার্যকর আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গড়তে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বিসিবির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিজেদের এই ব্যর্থতা অস্বীকারও করেননি নাজমুল। তাঁর উপলব্ধি, আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গড়াটা সহজ নয়। এটা বুঝতে তাঁদের চারটি বছর লেগে গেছে।
নাজমুল সাংবাদিকদের বলেছেন- ‘শুরুতে যতটা সহজ ভেবেছিলাম, ততটা সহজ নয়। আমরা দুটি জায়গায় পরীক্ষামূলক হিসেবে দুটি কমিটি করে শুরু করেছি। একটি সিলেট, আরেকটি চট্টগ্রামে। এটি করতে গেলে কী কী সমস্যার পড়তে পারি কিংবা পরিবর্তন করতে হবে কি না, এসব দেখতে চেয়েছি। আমাদের দেখা মোটামুটি শেষ। আজ (কাল) যা জানতে পারলাম—এটা সম্ভব।’
আঞ্চলিক ক্রিকেটে প্রত্যাশিত গতি না পাওয়ায় গত দেড় বছরের মহামারিকে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখালেও নাজমুল আরও কয়েকটি বিষয় সামনে এনেছেন। ‘আঞ্চলিক ক্রিকেটের মাঠ কোথায়? ডিসি (জেলা প্রশাসক) থাকবে ওটার প্রধান? এখন তো আছেই, তাহলে এটিকে আঞ্চলিক ক্রিকেট বলে দিলেই হবে? ডিসি কোথায় যাবে? মাঠ কোথায়? খেলা চালাবে কে? এটার অবকাঠামো দরকার, নিজস্ব শক্তি দরকার’—আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠনের প্রতিবন্ধকতাগুলো বলছিলেন নাজমুল। তবে তিনি আশাবাদী তাঁরা এটা করতে পারবেন- ‘আমরা করতে পারব। তবে আমাদের বিনিয়োগ দরকার।’
‘বিনিয়োগ’ অবশ্য বিসিবি আরও আগেই শুরু করেছে। সূত্র জানায়- আঞ্চলিক ক্রিকেট বাস্তবায়নে বিসিবি ২০১৯ সালে খরচ করেছিল ১৭ লাখ টাকা, ২০২০ সালে ২৩ লাখ। আর চলতি অর্থবছরে ‘আঞ্চলিক ক্রিকেট একাডেমি’র নামে বরাদ্দ ৩ কোটি ৮ লাখ টাকা।
নাজমুল যে মাঠের সংকট সামনে এনেছেন, সেটির সমাধানে বিসিবি নিজস্ব অর্থায়নেই মাঠ কিনতে চাইছে।
১২৮ কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে কাল বিসিবির বার্ষিক সভায় উঠেছে স্ট্যান্ডিং বা সাব-কমিটিতে কাউন্সিলরদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর বিষয়টিও। এসেছে ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের মান বৃদ্ধিতে আম্পায়ার-অফিশিয়ালদের গ্রেডিং বা স্তর পদ্ধতি প্রচলন, জাতীয় দলে খেলা ক্রিকেটারদের পেনশন স্কিম বা অবসরকালীন ভাতা চালু করা, আর্থিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধায় জাতীয় দল এবং প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের মধ্যে ব্যবধান কমানোর বিষয়গুলোও।