দক্ষিণ সুরমা কলেজ গেটে শিক্ষার্থী খুন: হত্যায় অংশ নেওয়া দুজন চিহ্নিত
স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা কলেজ গেটের সামনে এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় হত্যাকান্ডে অংশ নেওয়া দুজনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে হত্যাকারীদের পরিচয় নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন ছাত্রলীগ নেতা বলে জানা গেছে।
তবে বৃহস্পরিবার রাত সাড়ে ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। কাউকে গ্রেফতারও করতে পারেনি পুলিশ।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান তালুকদার বলেন- প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে আমরা হত্যাকারী দুজনকে চিহ্নিত করতে পেরেছি। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এঘটনায় এখনো মামলা দায়ের হয়নি জানিয়ে ওসি বলেন- লাশ এখনো ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন হবে। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হবে।
চিহ্নিত হওয়া দুজনের নাম প্রকাশে অনিহা জানান ওসি।
তবে প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তির সাথে আলাপ করে জানা গেছে- এদের একজনের নাম সামসুদ্দোহা সাদী (২০) ও অপরজনের নাম তানভীর আহমদ (১৯)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান- দুপুরে চাচাতো ভাই রাফিকে নিয়ে কলেজে যান রাহাত। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে তারা যখন বের হয়ে আসছিলেন তখন সিলভার রংয়ের একটি মোটর সাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকেন সাদী ও তানভীর। কলেজের ফটকের ২০ থেকে ২৫ গজ ভেতরে রাহাতকে দেখতে পেয়ে মোটর সাইকেল থামান তারা। এরপর সাইকেল থেকে নেমেই রাহাতের উরুতে উপোর্যোপুরি ছুরিকাঘাত করেন সাদী। সাথে সাথেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রাহাত। রক্তে ভেসে যায় পুরো এলাকা। এদিকে ছুরিকাঘাতের পরই মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় সাদী ও তানভীর।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে পুলিশের একাধিক সূত্রও।
দক্ষিণ সুরমা কলেজ সূত্রে জানা যায়- মূল অভিযুক্ত সামসুদ্দোহা সাদী এই কলেজের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। উশৃঙ্খল কর্মকান্ডের অভিযোগে তাকে কলেজ থেকে বহিস্কার করা হয়।
সাদী ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে। তিনি সিলেট ছাত্রলীগের কাশ্মীর বলয়ের সঙ্গে যুক্ত বলে নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র। সাদী দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার থানা এলাকার সিলাম পশ্চিম পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার সাথে থাকা তানভীরও একই এলাকার বাসিন্দা।
নিহত রাহাত দক্ষিণ সুরমা উপজেলার পুরাতন তেতলি এলাকার সুরমান আলীর ছেলে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়নি।
এদিকে এ ঘটনায় দক্ষিণ সুরমা কলেজের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এমন তথ্য জানিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম বলেন- কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া কলেজে ৩ দিনের জন্য পাঠদান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পরীক্ষা চলবে।
রাহাতের হত্যাকারীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।